World Knowledge In Bengali

Wednesday, February 13, 2019

ব্যাঙেদের তিনটি আজব কথা। যা না জানলেই নয়!!!!

                    (Source-Pixabay.Com)

বিষাক্ত ব্যাঙ

ব্যাঙ এর জিভ থেকে যে আঠা জাতীয় পিচ্ছিল পদার্থ বের হয় তা বিষাক্ত। তাছাড়া ব্যাঙের অমসৃন চামড়া থেকে 'ব্যাটারাচোটাবসন' নামে এক ধরনের বিষাক্ত লালা বেরোয়। সাধারণ ব্যাঙ-এ খুবই সামান্য পরিমাণে থাকে। কিন্তু সবচেয়ে বেশি পরিমাণে উক্ত নির্গত হয়। আর তা খুবই উগ্র। মানুষের পাকস্থলীতে কোন ক্রমে এক ফোঁটা বিষ প্রবেশ করলে মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী। পশ্চিম কলম্বিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা, মোজাম্বিক এবং চোকরা নামক স্থানে এ জাতের ব্যাঙ বাস করে।

ক্ষুদ্রতম ব্যাঙ

হাইলা অকুপারিস নামের এক জাতের গেছো ব্যাঙ এর সন্ধান পাওয়া গেছে যারা সমাজের ক্ষুদ্রতম প্রমাণিত হয়েছে। 1910 খ্রিস্টাব্দে সর্বপ্রথম এদের আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ পূর্বে এবং আফ্রিকা মোজাম্বিক এদের দেখা যায়। লাফিয়ে লাফিয়ে এক গাছের ডাল থেকে অন্য ডালে ঘুরে বেড়ায় এরা। ইদানীংকালে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নিদর্শন মিলেছে। ঈশ্বর' কে অশেষ ধন্যবাদ যে এমন ব্যাঙ ভারতের কোথাও দেখা যায় না।

বিশ্বের প্রথম ব্যাঙ

জীববিজ্ঞানীদের মতে পৃথিবীতে প্রথম ব্যাঙ আবির্ভাব ঘটেছিল প্রায় 270 মিলিয়ন বছর (1 মিলিয়ন=10 লক্ষ) আগে। তবে এদের আকৃতিগত পার্থক্য তখন অবশ্যই কিছু ছিল। অতি-প্রাচীন কালের একটি জীবাশ্ম পাওয়া গেছে যা থেকে তখনকার ব্যাঙ এর আকৃতি সম্বন্ধে মোটামুটি একটা ধারণা করে নেওয়া যেতে পারে। চেহারার দিক থেকে বর্তমানে ব্যাঙ-এর সঙ্গে যেমন বৈসাদৃশ্য দেখা যায় আবার পায়ের পাতাও ছিল সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ধরনের। এখনকার ব্যাঙের পায়ের পাতা যেমন হাঁসের মতো চামড়া দিয়ে জোড়া থাকে। প্রথম আবির্ভাব কাল এর ব্যাঙ এমন ছিল না। তবে আনন্দের বিষয় প্রথম আবির্ভাব আকৃতি বিশিষ্ট ব্যাঙ পৃথিবী থেকে লুপ্ত হয়ে যায়নি 1917 খ্রিস্টাব্দের নিউজিল্যান্ডের স্টিফেন্স দ্বীপে অতি প্রাচীন কালের সেই ব্যাঙের দেখা মেলে।

গাছে গাছে ব্যাঙের মেলা

আমরা জানি ব্যাঙ উভচর প্রাণী। জলে ও স্থলে এদের বাস। স্থলে বলতে স্থলভূমিকেই বোঝায়। কিন্তু বিশালায়তন গাছের ডালে ডালে ব্যাঙ ঘুরে বেড়ায় শুনলে বিস্ময়ের উদ্রেক করবে বৈ কি। অর্থ হল এমন দৃশ্য অবশ্যই চোখে পড়বে যদি আমরা হাইতি দ্বীপে যায়। তারা গাছে বাস করে। গাছ থেকে পোকামাকড় ধরে আহার করে জীবন ধারণ করে। অধুনা কেবলমাত্র হাইতি দ্বীপে প্রাচীন ব্যাঙ-এর দেখা মিললেও 1928 খ্রিস্টাব্দের ডোমিনিকান রিপাবলিকেও এরকম বিচিত্র ধরনের ব্যাঙ দেখা গিয়েছিল। হাইতি দ্বীপে পাওয়া যায় একটি স্ত্রী-ব্যাঙ ধরা সম্ভব হয়েছিল যার দৈর্ঘ্য ছিল 5.63 ইঞ্চি তবে এদের গড় দৈর্ঘ্য 3.58 ইঞ্চি।

এই আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন এবং এরকম এর অন্যান্য মজার গল্প, অবিস্মরণীয় কথা এবং আজব বিভিন্ন জিনিস জানবার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটে সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন।

             ভালো কাটুক আপনার দিনটি

Tuesday, February 12, 2019

বাংলার দুই মনীষীর অবাক করে দেওয়ার ছোটবেলার গল্প

        বাংলার বিখ্যাত নাট্যকার দ্বিজেন্দ্রলাল রায়
                    (Source-Google.Com)

অবাক কান্ড

দ্বিজেন্দ্রলালের বয়স যখন পাঁচ বছর। পিতা কার্তিক চন্দ্র রায় ছিলেন একজন সুগায়ক। একদিন তিনি হারমোনিয়াম বাজিয়ে খেয়াল গান গাইছেন। দ্বিজেন্দ্রলাল একমনে শুনছে।

গাইতে গাইতে পিতা কি একটা কাজে হঠাত্ উঠে গেলেন। দ্বিজেন্দ্রলাল সেই অবসরে হারমোনিয়াম নিয়ে বসলো এবং চাবি টিপতে লাগলো। কিছুক্ষণ পরে কার্তিক চন্দ্র ফিরে এসে শিশু পুত্রের কান্ড দেখে অবাক। ছেলে তার গাওয়া কঠিন গানটি ঠিক ভাবে শুরু করে গাইছে।

অদ্ভুত ছেলেটি গুণ। 7-8 বছর বয়সে একজন অনুকরণে বক্তৃতা দিয়ে সবাইকে অবাক করে দিয়েছিল সে। আর কি সুন্দর আবৃত্তি করতে পারত। একবার পড়েই গরগর করে তা বলে যেত।

ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ার সময় এক অবাক কান্ড ঘটল। একদিন ক্লাসের বেশিরভাগ ছাত্র পড়া তৈরি করে আসেনি। তাই শিক্ষক মহাশয় তাদের বললেন- "তোমরা সব ঘরের ধারে দাঁড়িয়ে পড়া মুখস্ত কর"। ছাত্ররা তাই করতে লাগল।

খানিক পরে তিনি দ্বিজেন্দ্রলালের দিকে তাকিয়ে বললেন-"তুমি কি করছো? ও, তোমার বই নেই? তাহলে কি করে পড়বে?"

দ্বিজেন্দ্র বলল-"আমার পড়া মুখস্থ হয়ে গেছে"।

শিক্ষক মহাশয় অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন- "কিভাবে?"

দ্বিজেন্দ্র জবাব দিল-"ওদের পড়া শুনে শুনে"

শিক্ষক মহাশয় পরীক্ষা করে দেখলেন সত্যিই তাই অন্য ছেলেদের পড়াশোনা মুখস্থ হয়ে গেছে অথচ সেই সব ছাত্র দের কেউ বই দেখে পড়া মুখস্ত করতে পারেনি।

এই ছেলেই বাংলার বিখ্যাত নাট্যকার দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ডি. এল. রায় নামেই তিনি বেশি পরিচিত

ব্রজেন্দ্রনাথ শীল বিশ্বের শ্রেষ্ঠ পণ্ডিতগণের সভায় সম্মান লাভ করেছিলেন।
(Source-Google.Com)

যেমন তেমন ছেলে নয়

1864 খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেছিল একটি ছেলের। নাম ব্রজেন্দ্রনাথ। তার যখন সাত বছর বয়স তখন তার বাবা মারা গেলেন। ছেলেটি পড়লো বিপদে। সংসার প্রায় অচল হয়ে পড়ল। 

পড়াশোনা চালানোই ছেলেটির কঠিন হয়ে উঠল। তবে লেখাপড়ায় সে ছিল খুব ভালো তাই স্কুলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেতে অসুবিধে হলো না। ব্রজেন্দ্রনাথ তখন ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র। গরমের ছুটি হয়েছে। অন্য ছেলেদের মত হেলায় খেলায় সময় না কাটিয়ে সে একমনে বীজ গণিত চর্চা করতে লাগলো। ছুটি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার বীজগণিতের সব কিছু শেষ হয়ে গেল। সে কথা স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কানে যেতেই তিনি অবাক হয়ে গেলেন। তিনি বজেন্দ্রনাথ কে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন-"তোমার নাকি গণিতের সব বিষয়ে শেখা হয়ে গেছে?"

বজেন্দ্রনাথ বলল-"হ্যাঁ স্যার"।

প্রধান শিক্ষক বললেন- "বেশ! তোমাকে পরীক্ষা করব।" 

পরীক্ষা নিয়ে প্রধান শিক্ষক আরও অবাক হয়ে গেলেন। বাস্তবিক বজেন্দ্রনাথ ভালোভাবেই বীজগণিতের সব কিছু আয়ত্ত করে ফেলেছে।

কৃতিত্বের সঙ্গে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বজেন্দ্রনাথ কলেজে ভর্তি হল। প্রথম বার্ষিক শ্রেণীতে পড়ার সময় এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটল।

একদিন সাহেব অধ্যাপক একদিন ন্যায়শাস্ত্রের একখানি বই হাতে করে ক্লাসে ঢুকলেন। তার হাতে বই দেখে বজেন্দ্রনাথ বলল-"স্যার বইটি আমি একবার পড়তে পারি"।

ছাত্রের কথা শুনে অধ্যাপক হেস্টিং অবাক। বললেন-"এটি এম. এ. ক্লাসের বই। তুমি এর কিছুই বুঝবে না।"

তবু ব্রজেন্দ্রনাথ এর খুব আগ্রহ দেখে তিনি বইখানি দিলেন। তিনি পরে বইটি অধ্যাপক সাহেবকে ফেরত দিয়ে বলল-"এই নিন আমার পড়া হয়ে গেছে।"

অধ্যাপক জিজ্ঞেস করলেন-"এত তাড়াতাড়ি ফেরত দিলে যে সবটা পড়তে পারো নি বুঝি?"

ব্রজেন্দ্রনাথ জবাব দিল-"সবটাই পড়ে ফেলেছি।"

"আচ্ছা দেখা যাক"-এই বলে হেস্টিং সাহেব অনেকগুলো প্রশ্ন করলেন। সবগুলো প্রশ্নের জবাবে ব্রজেন্দ্রনাথ ঠিক উওর দিল অবাক এবং খুশি হয়ে সাহেব অধ্যাপক বললেন তুমি একজন বিখ্যাত পন্ডিত হবে।

গুরুর আশীর্বাদ মিথ্যা হয়নি। ব্রজেন্দ্রনাথ শীল বিশ্বের শ্রেষ্ঠ পণ্ডিতগণের সভায় সম্মান লাভ করেছিলেন।

আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই নিজের বন্ধু মহলে এটিকে শেয়ার করতে ভুলবেন না।