Thursday, April 19, 2018

ক্লিপার শিপ ( clipper ship ) কাকে বলে ?

ক্লিপার শিপ ( clipper ship) একরকমের অতি দ্রুতগামী পালের জাহাজ । যে সময় পালতোলা জাহাজ বাতাসের ধাক্কায় চলত তখনকার সময়ে এই রকম জাহাজ ছিল সবচেয়ে দ্রুতগামী । এদের সম্মুখভাগটা ছিল লম্বা ও সরু-আর জলের কাছাকাছি নীচু হয়ে।
সামনে ঝুঁকে এরা চলত । এদের মাস্তুলগুলো খুব
লম্বা ও উচু হত—তাতে বিরাট বিরাট পাল খাটানো।
থাকতো। এই রকম একটি পালতোলা জাহাজের
নাম ছিল লাইটনিং ( Lightning ) ; তাতে ১৩,০০০ বর্গফুট পাল খাটানো থাকতো।
             
                  ক্লিপার শিপ ( clipper ship )

চীনদেশের চা রপ্তানির জন্যেই এই জাহাজের।
পরিকল্পনা করা হয়েছিল। ইংলণ্ডে ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে
তখন চীনের চায়ের খুব বেশি চাহিদা ছিল। প্রত্যেক
বছরের প্রথম উৎপন্ন চা তাড়াতাড়ি বিদেশে পাঠালে
খুব চড়া দাম পাওয়া যেত।

বছর কুড়ি এই ক্লিপার জাহাজ ছিল জলপথের রাজা নিউইয়র্কে ১৮৪১ খ্রীস্টাব্দে প্রথম ক্লিপার জাহাজ জলে ভাসানে৷ হয়েছিল—তার নাম ছিল হেলেনা। এটা ততবড় বড় ছিল না, লম্বায় ১৩৫ ফুট আর জাহাজের নীচের তলার কাঠের ( beam ) দৈর্ঘ্য ছিল ৩০ ফুট ৬ ইঞ্চি । এর দুবছর পরে রেনবো ( Rainbow) জাহাজ তৈরি করা হল, সেটা আরো বড়। তারপর তৈরী হল সী উইচ (Sea Witch ) এটা ছিল ১৭০ ফুট লম্বা আর এর তলার কাঠ ছিল ৩৪ ফুট। রেনবো জাহাজ নিউইয়র্ক থেকে ক্যান্টন পৌছতে ছয় মাসের কিছু কম সময় নিয়েছিল ।

ক্রমশঃ জাহাজের আকার বাড়ানোর কাজ শুরু হল।
শেষ পর্যন্ত ক্লিপার জাহাজ ৩১৪ ফুট লম্বা করে তৈরী হল আর তার তলার কাঠ বাড়িয়ে করা
হল ৪৯ ফুট । জাহাজের গতিও নানা উপায়ে
বাড়ানো হতে লাগল।

কিন্তু ক্লিপার জাহাজের আয়ু বেশী দিন থাকল না বাম্পশক্তি আর ইস্পাত আবিষ্কারের ফলে ১৮১৯ খ্রীস্টাব্দেই কাঠের জাহাজে বাষ্পীয় ইঞ্জিন বসানো হল। তারপর কাঠের জাহাজের বদলে তৈরী হল ইস্পাতের জাহাজ । তার সঙ্গে বাস্পীয় ইঞ্জিন যোগ করায় কাঠের তৈরী পালতোলা জাহাজের দিন ফুরিয়ে গেল।

No comments:

Post a Comment