সবার আগে যেসব অস্থিক বা হাড়ওয়ালা প্ৰাণী পৃথিবীতে দেখা দিয়েছিল তাদের বংশধররা কিন্তু আজও টিকে আছে এবং আমাদের, বাঙ্গালীদের, সেটি এখন প্রতিদিনের একটি প্রিয় খাদ্য । এই প্রাণী আর কেউ নয়-মাছ।
প্রাচীনকালে মাছেদের শরীরের অনেকটাই- বিশেষ করে মাথার দিকটা থাকত খোলা দিয়ে ঢাকা। বাইরের গড়নটার একালের মাছের সঙ্গে বেশ খানিকটা মিল থাকলেও হুবহু একালের মাছের মতো ছিল না।
বেঁচে থাকতে হলে সকলকেই শ্বাস নেবার জন্য বাতাসের অক্সিজেন গ্রহণ করতে হয়। মাছেদেরও তা করতে হয়। বাতাসের মধ্যেই প্রধানত অক্সিজেন বেশী থাকলেও কিছু অক্সিজেন জলে-গোলা অবস্থায়ও পাওয়া যায়, আর মাছেরা,—শুধু মাছ কেন, ঐরকম জলের জীবরাই,-এই জলে-গোলা অক্সিজেনই শ্বাস গ্রহণের জন্য ব্যবহার করে। ডাঙ্গায় প্রাণীদের অক্সিজেন নেবার জন্য ফুসফুস আছে, কিন্তু মাছেদের তা নেই। তার বদলে আছে কানকো বা ঝিল্লী। এই কানকোর সাহায্যেই ওরা জলে-গোলা অক্সিজেন টেনে নিতে পারে। ফুসফুস না থাকায় ডাঙ্গায়, তুললেই মাছ মরে যায়।
তবে কই-জাতীয় কয়েকটি মাছ ডাঙ্গায় তুললেও বেশ খানিকটা সময় বেঁচে থাকতে পারে। এর কারণ, কানকো ছাড়াও ওদের একটা করে অতিরিক্ত শ্বাসযন্ত্র আছে। তবে দুই-এক জাতের মাছের ফুসফুসও দেখা যায়। সেটা সাধারণ নিয়ম নয়-কানকো ছাড়া,মাছের শরীরে থাকে একটা বাতাস-ভরা থলি, যাকে আমরা বলি মাছের পটকা। এই পটকাই মাছকে জলে ভাসিয়ে রাখতে সাহায্য করে।
মাছের মধ্যে অনেক কিম্ভুতকিমাকার মাছও দেখা যায়, যেমন ‘চারচোখো’ মাছ। লণ্ঠন মাছ। থাকে সমুদ্রের একেবারে নীচের দিকে, সেখানে গভীর অন্ধকার। এদের দেহের দুপাশে সারি সারি কতকগুলো টর্চের বালবের মতো জিনিস বসানো ; থেকে থেকে সেগুলো জ্বলে ওঠে আর তারই আলোয় মাছ দিব্যি জলের তলায় সব কিছু দেখে নিতে পারে।
কোন কোন লণ্ঠন মাছের আবার শুধু একটাই লন্ঠন সম্বল। কোন কোন মাছ আবার বিদ্যুৎ তৈরি করতে পারে। বৈদ্যুতিক বান মাছ (ইলেকট্রিক ঈল) এই জাতীয় মাছ। এই জাতের কোন কোন বান মাছ ৫০০ ভোল্টের বিদ্যুৎও তৈরি করতে পারে। উড়ক্কু মাছ বা ফ্লাইং ফিশ লাফ দিয়ে জলের উপরে ওঠে ও ডানায় ভর করে ওড়ার মতো বাতাসে ভেসে চলে। কোন কোন মাছ পাখিদের মতো বাসা বেঁধে সেই বাসায় ডিম পাড়ে। বাসা অবশ্য বাঁধা হয় জলের তলায়। মাছেদের সম্বন্ধে আর একটি বড় কথা, সমুদ্রের মাছেরা অনেক সময়েই ঝাক বেঁধে ঘুরে বেড়ায়।
এই আর্টিকেলটি পড়বার জন্য আপনাদের সবাইকে আমি আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই। এরকম আরও মজার এবং পৃথিবীর অচেনা-অজানা রহস্য সম্পর্কে আর্টিকেল পাবার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটে সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন।
No comments:
Post a Comment