Saturday, April 21, 2018

পৃথিবীতে অবস্থিত এমন ৫ টি জায়গা যেখানে সাধারণ মানুষের যাওয়া একেবারে নিষিদ্ধ

বন্ধুরা, টাকা থাকলেই যে মানুষ পৃথিবীর যেকোন জায়গায় যেতে পারে এই ধারণা সঠিক নয়। রহস্যময় এই পৃথিবীতে নানান গোপনীয় এবং নিষিদ্ধ জায়গা আছে। এইসব জায়গায় মানুষের প্রবেশ করা একেবারে মানা আছে। তাই আজ আপনাদের আমি এইরকমই পৃথিবীতে অবস্থিত কিছু নিষিদ্ধ জায়গার কথা বলব।

১. স্নেক আইল্যান্ড- ব্রাজিলের সাও পাওলো শহর থেকে প্রায় ১৪৪ কিলোমিটার দূরে আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থিত বিখ্যাত দ্বীপ কুয়েমাদা গ্রান্ডে। যার অপর নাম স্নেক আইল্যান্ড বা সাপের দ্বীপ। এই দ্বীপটিতে পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত সাপের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়। ১১০ একরের এই দ্বীপে প্রায় চার হাজার সাপ লক্ষ করা যায়। এই দ্বীপে গোল্ডেন ল্যান্স হেড নামে সবচেয়ে বিষাক্ত প্রজাতির সাপ বসবাস করে। মনে করা হয় এই সাপের বিষ এত বিষাক্ত এবং ক্ষতিকর যে তা মানুষের ত্বক গলিয়ে দিতে পারে। তাই এই দ্বীপে মানুষের যাওয়া একেবারেই উচিত নয়। ব্রাজিল সরকার ১৯০৯ সালে এই দ্বীপে একটি লাইট হাউস বা আলিক স্তম্ভ স্থাপন করে। যাতে সমুদ্রে যাতায়াতকারী জাহাজ গুলি এই দ্বীপ থেকে দূরে থাকতে পারে। এই লাইট হাউস বা আলিক স্তম্ভটির দেখাশোনা করার জন্য একটি পরিবারকে নিযুক্ত করা হয়। কিন্তু ১৯২০ সালে এই পরিবারটিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। কেননা গোল্ডেন ল্যান্স হেড নামক সাপ তাদের বাড়িতে ঢুকে গিয়েছিল। অবশেষে ব্রাজিল সরকার বিষাক্ত সাপের এত বেশি পরিমাণ লক্ষ্য করে এই দ্বীপটিকে সাধারণ মানুষের প্রবেশের অযোগ্য বলে ঘোষণা করে।


২. এরিয়া ৫১- এই জায়গাটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডায় অবস্থিত। এরিয়া ৫১ অঞ্চলটির রহস্য সম্পর্কে মানুষের জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। ২৭ কিলোমিটার অঞ্চল জুড়ে অবস্থিত এই জায়গাটির রহস্য নিয়ে আলোচনা শেষ নেই। বলা হয়ে থাকে যে আমেরিকার নানান গোপনীয় তথ্য এই জায়গায় সংরক্ষিত আছে। এমনকি এই জায়গার আশেপাশে কাউকে দেখতে পেলে গুলি করে দেওয়া হয়। আমেরিকার সামরিক বাহিনীর মতে আধুনিক প্রতিরক্ষা যানবাহনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় এই জায়গাটিতে। কিন্তু মনে করা হয় যে আমেরিকার এই জায়গাটিতে গোপনীয়ভাবে ইউ এফ ও বা উড়ন্ত চাকি এবং এলিয়েন সম্বন্ধে অনুসন্ধান ও নানান পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে। যা বেশিরভাগ বৈজ্ঞানিক, ঐতিহাসিক এবং পণ্ডিতগণ দারায় স্বীকৃত সত্য।



৩. নর্থ সেন্টিনাল আইল্যান্ড- ভারতের আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ সমূহের কাছাকাছি অবস্থিত এই দ্বীপে এমন এক মানব জাতি বসবাস করে যারা আধুনিক সভ্যতার রীতিনীতি থেকে অনেক দূরে এবং একমাত্র এই মানব জাতির লোকেরা নিজেদের জীবনযাত্রা প্রাচীনকালের মানুষের মত করে অতিবাহিত করে। এই দ্বীপে বসবাসকারী উপজাতিরা নিজেদের এলাকায় বাইরের লোকেদের আনাগোনা সম্পন্ন আনাগোনা একদম পছন্দ করে না এবং কেউ এই দ্বীপে এসে পড়লে তার ওপর তারা তীর, বর্ম, পাথর প্রভৃতি দিয়ে আক্রমণ করে।আর এ রকমই একটি ঘটনা ঘটেছিল ২০০৬ সালে যখন সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে দুই জেলে ভুলবশত স্রোতের দ্বারা বাহিত হয়ে এই দ্বীপে এসে পড়েছিল। এই প্রজাতির লোকেরা এদেরকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। যে কারণে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের সবরকম চেষ্টা ব্যর্থ এবং ঘাতক বলে পরিগণিত হয়েছে। তাই এই দ্বীপে সাধারণ মানুষের যাওয়া পুরোপুরি নিষিদ্ধ বলে সরকার ঘোষণা করেছে।


৪. শাভ্যাল বোর্ড গ্লোবাল সিড- নর্থপোল থেকে ১২৪৭ কিলোমিটার দূরে নরওয়েতে স্পিটবার্গেন দ্বীপে এমন এক ধরনের বৃহদাকারের সিন্দুক আছে যেখানে সমস্ত পৃথিবী জুড়ে নানান গাছপালা থেকে সংগ্রহ করা ৮ লক্ষ ৪০ হাজার প্রকার বীজ সংগ্রহ করা হয়েছে। যদি বিশেষ কোনো সময় পৃথিবীতে দুর্যোগ বা বিপর্যয় দেখা যায় তাহলে সে সময় যদি কোন প্রজাতির গাছপালা ধ্বংস হয়ে যায় তাহলে সেই পরিস্থিতিতে এখান থেকে বীজ নিয়ে সেই প্রজাতির গাছের পুনরুজ্জীবন ঘটানো হয়ে থাকে। এই জায়গায় বীজ সিন্দুকের সুরক্ষার কাজে নিযুক্ত ব্যক্তিদের ছাড়া সাধারণ মানুষের যাওয়া একেবারে নিষিদ্ধ।


৫. মেজগোরিয়া- এই স্থানটি রাশিয়াতে অবস্থিত। মনে করা হয় যে এই জায়গাটিতে একটি গোপনীয় পরমাণু কেন্দ্র রয়েছে যার রক্ষা রুশ সেনাবাহিনী করে থাকে। বলা হয় যে এই অঞ্চলটিতে একটি আধুনিক ও উন্নত মানের যন্ত্রচালিত পরমাণু মিসাইল রাখা আছে যে কারণে এখানে কোনো মানুষ,এমনকি এখানকার স্থানীয় বাসিন্দাদের এই শহরের সেনাবাহিনীর বিনা অনুমতিতে আসা নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে।


এই প্রবন্ধটি পড়ার জন্য আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। এইরকম আরও অদ্ভুত, অজানা, দারুন, মজার, পৃথিবীর রহস্য সম্পর্কে নানান তথ্য পাওয়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন।

No comments:

Post a Comment