Sunday, May 13, 2018

সূর্য সম্পর্কে পাচঁটি অজানা তথ্য


               সূর্য সম্পর্কে পাচঁটি অজানা তথ্য

তারা, নক্ষত্র তার ছায়াপথরা আমাদের অতি
দূরের প্রতিবেশী ভাল করে চেষ্ট৷ না করলে তাদের
খোজখবর পাওয়া শক্ত। কিন্তু সূৰ্য আমাদের নিকট
প্রতিবেশী। সূর্য সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা নানান পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বহু তথ্য আবিষ্কার করেছেন। তাই আজ আপনাদের সূর্য সম্পর্কে আমি পাচঁটি অজানা তথ্য বলব যা আপনাদের নতুন কিছু জানার সঙ্গে সঙ্গে জ্ঞান আহরণ করতেও সাহায্য করবে-

১.সূর্য কতটা গরম-সূযআর পৃথিবী দুজনেরই একবয়সেরই হবে প্রায় ৫০০ কোটি বছর বয়স হয়েছে । ছোট বলে পৃথিবীর উপরটা জুড়ে ঠাণ্ডা হয়ে গিয়েছে, সূর্য বড় বলে তা হয়নি। এখনও সে পুরোপুরি একটা জ্বলন্ত গ্যাসের গোলা হয়েই আছে। বেশির ভাগেই হাইড্রোজেন গ্যাস, তবে কিছু কিছু হিলিয়াম গ্যাস, অক্সিজেন গ্যাস, কার্বনও আছে। তাছাড়া লোহা ইত্যাদি সবরকম ধাতুও আছে বলে জানা যায়, অবশ্য সব কিছুই গ্যাস হয়ে আছে। লোহা এত শক্ত জিনিস, তাও একেবারে গ্যস হয়ে গিয়েছে- সূর্য এতই গরম ।

কী ভয়ানক গরমে যে এরকম হয়েছে, তার ধারণা
করা আমাদের সম্ভব নয়। সূর্যের উপরের
তাপ ৬,৫০০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড। এও তো কিছুই
নয়, একেবারে ভিতরে সূর্যের তাপ নাকি 
৩ কোটি ডিগ্ৰী ।

অত তাপ আসে কোথা থেকে ? মনে করা হয়।
যে, সূর্যের মধ্যে সূক্ষ কনাগুলি ছুটোছুটি করতে
করতে অনবরত ধাক্কা খাচ্ছে, আর তাতেই সূর্য
এত গরম হয়ে উঠছে।

সেই তাপ আর আলো সূর্য থেকে ক্রমাগত
বেরিয়ে মহাকাশে ছড়িয়ে পড়ছে। তার খানিকটা-
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ঠেকে ফিরে কিংবা শুষে যায়।
বাকী তাপটুকু পেয়েই পৃথিবীর সব প্রাণীর সব কাজ
চলে যাচ্ছে।



২. সূর্য কত জোরে ছোটে-সূর্য কেবলই ঘুরপাক খাচ্ছে। তার মাথাটা একেবারে খাড়া নয়, একটু সামনে ঝুঁকে থাকে। এক পাক ঘুরতে তার পেটের কাছটার লাগে ২৫ দিন। তা ছাড়া সে নাকি তার দলবল নিয়ে এক সেকেন্ডে ১২ মাইল, অর্থাৎ দিনে প্রায় ১ লক্ষ
মাইলের চেয়ে কিছু বেশী জোরে এগিয়ে চলেছে।
লিরা বা লায়রা (Lyra ) নক্ষত্রের অভিজিৎ তারার
দিকে। কেউ কেউ বলেন সূর্য চলেছে হাৰ্কিউলিস
নক্ষত্রের একটি তারার (নিউ হার্কিউলিস ) দিকে।
যা-ই হোক, দিকটা প্রায় একই। আবার এ কথাও
জানা গিয়েছে যে, সূৰ্য আমাদের আকাশগঙ্গা ছায়া পথের ঠিক মাঝখানকার বিন্দুকে প্রদক্ষিণ করছে। সেকেন্ডে ১২০ থেকে ১৭০ মাইল বেগে ছুটে ছুটে ২০ কোটি বছরে তার একবার ঘোরা হয়। খালি চোখে তো সূর্যের দিকে তাকানো যায়। না। গ্রহণের সময় আমরা ভুসো সানগ্লাস দিয়ে সূর্যকে দেখি। তাতেও মনে হয় যে সেটা একটা ভয়ংকর আগুনের গোলা। কিন্তু বিজ্ঞানীরা তো আরও বেশী জানতে চান। অথচ সাধারণ দূরবীন
দিয়ে তার দিকে দেখা উচিত নয়। । গ্যালিলিও খালি চোখে দূরবীন দিয়ে দেখতে গিয়ে কিছুদিনের জন্য অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। তাই, নানা কৌশল করে, অনেক রকমের যন্ত্রপাতি দিয়ে সূর্যকে দেখা হয়েছে ।



৩. সূর্য কি দিয়ে তৈরী-তাতে দেখা গিয়েছে যে, সূর্যের সারা গায়ে যেন চাল ছড়ানো রয়েছে। । এগুলো আসলে হচ্ছে বিরাট বিরাট গ্যাসের রাশি। এই সমস্তটাকে বলে সূর্যের আলোকমন্ডল (photosphere). এটাকে আগাগোড়া ঘিরে রয়েছে কয়েক হাজার মাইল চওড়া আগুনের শিখা । এই আগুনের বেড়াটাকে বলে বর্ণমণ্ডল (chromosphere ). একে ঘিরে বহুদূর পর্যন্ত রয়েছে কম উজ্জ্বল আলোর একটা জায়গা, তা হচ্ছে ছটামণ্ডল (corona ), আর, বর্ণমণ্ডলের মধ্যে কয়েকটা জায়গায় দেখা যায় যেন আগুনের ঘূর্ণিঝড় উঠেছে। লকলক করে সেই আগুনের শিখা ( solar prominence ) উঠছে। সেই আগুনের শিখার এক একটাকে আড়াই লক্ষ মাইল পর্যন্ত উঁচু হয়ে উঠতে দেখা গিয়েছে।

৪. সূর্যের রং-সূর্যের রং প্রথমে হয় তো নীল বা সাদা ছিল। তারপর, তেজ বেরিয়ে বেরিয়ে সে এখন হলদে
তারার দলে এসেছে । ভোরে আর সন্ধ্যায় কিন্তু
তাকে লাল দেখায় । সেটা তার নিজের রং নয় ।
বিজ্ঞানীরা বলেন যে, ভোরে আর সন্ধ্যায় সূর্যের
আলো তেরছাভাবে পৃথিবীতে পড়ে বলে সেই
আলোতে তাকে লাল দেখায়।

৫.সূর্যের আলোর রং-সূর্যের আলোর রং সাদা দেখায়। এ রং কিন্তু আমাদের চোখের দেখার ভুল। সূর্যের আলো মূলতঃ সাতটি রঙের মিলন। যদি একটা ত্ৰিপার্শ্ব কাচ ( prism) নিয়ে সূর্যের কিরণের সামনে ধরা যায়, তাহলে দেখা যাবে বিপরীত দিকের দেওয়ালে পর পর সাতটি দেখা রং পড়েছে। এগুলি হল বেগুনি, নীল আকাসী, সবুজ, হলুদ, কমলা, লাল। সংক্ষেপে- বেনীআসহকলা।
ধন্যবাদ.........

No comments:

Post a Comment